বাণিজ্যমেলা শুরু, কাজ অসম্পূর্ণ

শুরুর দ্বিতীয় দিনেও বেচাকেনা তেমন শুরু হয়নি ২৫ তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায়। অর্ধেকের বেশি স্টল-প্যাভিলিয়নের এখনো নির্মাণকাজই শেষ হয়নি। ঠুকঠাক শব্দে শ্রমিকেরা কাজ করছে বেশির ভাগ প্যাভিলিয়নে। কারও বিদ্যুতের সংযোগ না পাওয়ায় আবার কারও কাজ শেষ হয়নি শ্রমিক সঙ্কটের কারণে। আবার যেসব স্টল নির্মিত হয়েছে সেগুলোতে কেউ কেউ ব্যস্ত রয়েছেন পণ্য সাজানোর কাজে। মাসব্যাপী মেলার প্রস্তুতি শেষ করতেই প্রথম সপ্তাহ কেটে যেতে পারে বলে ধারণা করছে সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের মেলার মাঠ ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

মেলা সংশ্লিষ্টরা বলছে, মেলা শুরু হলেও এখনো কেনাকাটা শুরু হয়নি। ক্রেতাদের উপস্থিতি অনেক কম। কিছু ক্রেতা বা দর্শনার্থী মেলাপ্রাঙ্গণে আসলেও তারা ঘুরে ফিরে চলে যাচ্ছে। মেলায় কিছু স্টলের নির্মাণকাজ এখনো চলছে। কিছুর কাজ শেষ হলেও তারা ব্যস্ত সাজ-সজ্জাতে। ধারণ করা হচ্ছে আগামী সপ্তাহের দিকে মেলা পুরোদমে জমে উঠতে পারে।

মেলায় স্টলের নির্মাণকাজ এখনো চলছে। ছবি: সংগৃহীত

মেলায় স্টলের নির্মাণকাজ এখনো চলছে। ছবি: সংগৃহীত

আইটি এলিয়েন্সের কর্মকর্তা শরিফ বলেন, মেলায় আগত দর্শনার্থীরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন স্টলের পণ্য। অনেকেই আবার দরদামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছেন। তিনি বলেন, মেলা শুরু হওয়ার পর আগামী শুক্রবার প্রথম ছুটির দিন। প্রতিবারের মতো এবছরও শুক্রবার জমে উঠবে মেলা। ওই দিন থেকে বেচা-বিক্রিও বাড়তে পারে।

থাইল্যান্ড প্যাভিলিয়নের কর্মকর্তা রিপন জানান, স্টল নির্মাণের কাজ এখনো শেষ হয়নি। আজ মাত্র বিদ্যুতের সংযোগ পেয়েছি। স্টল নির্মাণের কাজ শেষ হলে শুরু হবে সাজানোর কাজ। ফলে এই সপ্তাহ চলে যেতে পারে। আগামী সপ্তাহ থেকে স্টলে ক্রেতা বা দর্শনার্থীদের আগমনে জমে উঠবে বলে আশা করছি। তিনি বলেন, বাণিজ্যমেলায় অনেক ব্যবসায়ী এখনো পণ্য সাজাতে পারেননি, অনেকে আবার অবকাঠামো নির্মাণেও পিছিয়ে পড়েছেন।

মেলায় নিজেদের প্যাভিলিয়নের কাজ দেখভাল করছিলেন আবুল খায়ের গ্রুপের প্রোডাক্ট প্রমোশন অফিসার ফাতিম। তিনি বলেন, আমাদের কাজ শুরু করতেই একটু দেরি হয়েছিল। আগামীকাল থেকে হয়তো মালামাল ডিসপ্লে শুরু করব। তবে প্যাভিলিয়নের পুরো কাজ শেষ করতে দু-এক দিন সময় লাগবে।

মেলায় শ্যামলী থেকে আসা এক ক্রেতা শারমিন সুলতানা সুইটি জানান, দ্বিতীয় দিনে মেলায় এসে কিছুটা হতাশ হয়েছি। এখনো পুরোপুরি প্রস্তুতি শেষ হয়নি। বলতে গেলে আমি হতাশ। এ মেলাটির আয়োজন অনেক আগে থেকেই শুরু হলেও এ রকম অব্যবস্থাপনা কাম্য নয়। এতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, পণ্য গুছিয়ে বসা অল্প কিছু স্টল-প্যাভিলয়নের বিক্রয়কর্মীরাও ক্রেতার অভাবে অলস সময় পার করেছেন। শনিবার থেকে বেচাকেনা বাড়বে এমন আশায় আছেন ব্যবসায়ীরা। মেলায় প্রাণ-আরএফএল, ওয়ালটন, হ্যামকো, গাজী গ্রুপ, যমুনাসহ দেশিয় বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর বহুতল প্যাভিলিয়নগুলো ইতোমধ্যে সুসজ্জিত হয়েছে। অলঙ্কার, প্রসাধনী, পোশাক, আসবাবপত্র, শুকনো খাবারের দোকানগুলোও বেশ সুসজ্জিত হয়ে উঠেছে।

মেলায় স্টলের নির্মাণকাজ এখনো চলছে। ছবি: সংগৃহীত

মেলায় স্টলের নির্মাণকাজ এখনো চলছে। ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার (১ জানুয়ারি) ২৫ তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন করেন। এবারের মেলায় বাংলাদেশসহ ২১টি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪৮৩টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল রয়েছে। মেলায় প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন রাখা হয়েছে ৬৪টি, সাধারণ প্যাভিলিয়ন ১৩টি, সাধারণ মিনি প্যাভিলিয়ন ৫৯টি, প্রিমিয়াম মিনি প্যাভিলিয়ন ৪২টি।

মেলা প্রাঙ্গণে রেস্তোরাঁ থাকবে ২টি, স্ন্যাকস বুথ ৭টি, প্রিমিয়ার স্টল ৮৪টি, সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন ৬টি, সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন ৮টি, সাধারণ স্টল ১০৭টি, ফুড স্টল ৩৫টি রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৭টি, বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন ১১টি এবং বিদেশি প্রিমিয়াম স্টল রাখা হয়েছে ১৭টি।

মেলা প্রতিদিন দর্শনার্থীদের জন্য সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এবার মেলার প্রবেশ ফি ১০ টাকা বাড়িয়ে টিকিটের মূল্য ৪০ টাকা করা হয়েছে। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের টিকিট ২০ টাকাই রাখা হয়েছে।

 

 

 

 

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন